নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর মাধবদীতে তুচ্ছ বিষয়ের জেরে মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৭) নামে এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ৪ কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো : আল আমিন।
নিহত মোবারক হোসেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। সে এবার মাধবদীর এসপি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নরসিংদী সদরের দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আলী আহম্মেদ এর ছেলে আরাফাত (১৯), মধ্য বিরামপুরের আব্দুর রহিমের ছেলে রাহাত (১৮), মাধবদী থানার দড়িপাড়া এলাকার সেলিমের ছেলে অলিউল্লাহ (২১) ও একই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে অলি (১৮)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১০ নভেম্বর বিকেল আনুমানিক ৪টার সময়ে মোবারক হোসেন ওরফে শাহালম তার কর্মস্থল থেকে রিক্সাযোগে বাড়ি ফেরার পথে মাধবদীর বাহাদুরপুরে পাকা রাস্তার মাথায় আসলে তার মুখে থুথু আসে। পরে সেই থুথু ফেললে ইয়াছিন মিয়া নামে এক কিশোরের গায়ে না পড়ে পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে।
এতে ইয়াছিন মোবারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। ইতোপূর্বে মোবারক এর সাথে ইয়াছিন এর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আড়াইহাজার থানাধীন বাহাদুরপুর এলাকায় বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় একাধিক বার ঝগড়া বিবাদ ও মারামারি হয়। এই ঝগড়া বিবাদকে কেন্দ্র করে ইয়াছিন ও তার অপরাপর সহযোগিরা পরিকল্পনা করে হত্যার জন্য সুযোগ খুৃঁজতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা অনুমান ৬টার সময় মাধবদী থানাধীন দক্ষিন বিরামপুর সাকিনস্থ জনৈক আউয়ালের চায়ের দোকানের সামনে মোবারক হোসেনকে পেয়ে ইয়াছিন ও অন্যান্য সহযোগিরা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক একই উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি নিয়ে কিছু বুঝার আগেই মোবারকের উপর অতর্কিতভাবে আক্রমন করে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
স্থানীয় লোকজন গুরতর আহত অবস্থায় মোবারককে চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরবর্তীতে ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারক মারা যায়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আল আমিন জানান, এ ঘটনায় মাধবদী থানায় মামলা দায়ের করার হয়।পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত এজাহারনামীয় ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।