নিজস্ব প্রতিবেদক : মোটরসাইকেলই কাল হলো ইঞ্জিনিয়ার আল আমিনের জীবনে।মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে বাধা দেওয়ায় সহকারী প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) আল আমিনকে হত্যার পর মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয় পেশাদার ডাকাত ও ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা।
দীর্ঘ ৫ বছর মামলা সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নরসিংদীতে চাঞ্জল্যকর এই হত্যা মামলায় ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক শামিমা পারভিন এই রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামী কারাগারে আছে। বাকি সব আসামী পলাতক রয়েছেন।
দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীরা হলো- (১) মরিচাকান্দি গ্রামের আ: করিমের ছেলে নুরুল আমিন ওরফে রাহুল, (২) ভাটেরচর দ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো: হৃদয় মিয়া, ৩) মরিচাকান্দি গ্রামের আলকাস মিয়ার ছেলে মো: কাউসার মিয়া, (৪) দুলালকান্দি এলাকার আওয়াল মিয়ার ছেলে মাহিন, (৫) একই এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম শুভ, (৬) দড়িচন্ডিবের গ্রামের জসিম উদ্দিরে ছেলে সুমন ওরফে সুন্দর সুমন,
(৭) বাঁশগাড়ী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আশ্রাব উদ্দিন ওরফে শাকিল (৮) রায়পুরা সাহেরচর গ্রামের কঠিল উদ্দিনের ছেলে রিপন, (৯) নোয়াকান্দি গ্রামের মহাজ উদ্দিনের ছেলে সাইদুর ও (১০) বেলাব ভাটেরচর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রুবেল। এদের মধ্যে মাহিন ও রাকিবুল ইসলাম শুভ কারাগারে রয়েছে। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত আলামিন প্লান ভিউ কনন্সালটেন্ট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারর্স ফার্ম এর সহকারী প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৬ই আগষ্ট রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নরসিংদী স্টেডিয়াম সংলগ্ন প্লান ভিউ কনন্সালটেন্ট এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স এর কর্মস্থল থেকে বেলাবর বাড়িতে ফিরছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিহত আল আমিন বেলাব উপজেলার দড়িকান্দি খাইল্লা বন্দর চকের প্রথম ব্রিজের সামনে পৌঁছলে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আল আমিনের গতিরোধ করে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
এতে বাধা দিলে ছিনতাইকারী ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর তার লাশ পাশ্ববর্তী একটি ক্ষেতের মধ্যে লাশ ফেলে নিহতের ব্যাবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় নিহতের পিতা নাজিম উদ্দিন মোহন বাদি হয়ে বেলাব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১১ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিহত আল আমিনের মামা ইঞ্জিনিয়ার মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের আশা ছিল হত্যাকারিদের ফাঁসি দেয়া হবে। আদালত অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আমারা উচ্চ আদালতের দারস্ত হবো।
বাদি পক্ষের মামলার আইনজীবি এ্যাড.খন্দকার হালিম বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা রাখছি পুলিশ পলাতক ৮ আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের রায় বাস্তবায়নে ভুমিকা রাখবে।
আরো খবর..