পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি : নরসিংদীর রায়পুরায় দাখিল পরীক্ষায় বন্ধুর হয়ে প্রক্সি দিতে এসে ধরা পড়েছে হৃদয় (১৪) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। সন্দেহজনক ভাবে তাকে ডেকে আনার পর সে নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরে তাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রকৃত পরীক্ষার্থী মাহাদী হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২৭ মে) সকালে মাদ্রাসা বোর্ডের স্থগিত হওয়া ইংরেজী-১ বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলার সৈয়দপুর মোহাম্মদীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা কেন্দ্রে একই উপজেলার চরসুবুদ্ধি মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যান। তাকে সন্দেহ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে প্রক্সি দিতে আসা হৃদয় এর কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশ পত্র নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পরে প্রবেশপত্র যাচাই বাছাই করে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে সে মাহাদীর হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন। ইতোমধ্যে সে মাদ্রাসা বোর্ডের আওতায় এসএসসি দাখিলের সবগুলো পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দ্র সচিব তাজ উদ্দিন জানান, এ কেন্দ্রে ১১টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়। প্রত্যেক মাদ্রাসার প্রধানগন এসে তাদের শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত করে আমাদের কাছে স্বাক্ষর করে যান। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের যাচাই করার মতো সুযোগ আমাদের নেই। অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি চরসুবুদ্ধি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবিএম গাজিউর রহমান এর শ্যালক এর পরিবর্তে হৃদয় নামে অন্য এক ছেলে এতদিন পরীক্ষা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষায় প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থীর কেও কেও বিদেশে আছে বা প্রস্তুতি চলছে। তারা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে পরীক্ষা দেওয়াচ্ছে। তারা রায়পুরার বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র বা বহিরাগত লোক। ওই কেন্দ্রে কয়েকবছর যাবত মাদ্রাসার প্রধান ও সহকারী শিক্ষক মিলে নিয়মিতভাবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নপত্র গোপন কক্ষে নিয়ে উত্তরপত্র তৈরী করে তা প্রতিটি কক্ষে বিতরণ করে।
এমনকি এ কাজে সহযোগীতা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারকে বসিয়ে রাখার কথা বলে প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়। অন্যদিকে এসব অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবী করেছেন কেন্দ্র সচিব তাজ উদ্দিন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজগর হোসেন বলেন, প্রক্সি দিতে আসা ছেলের নাম হৃদয়। সে উপজেলার চরসুুবুদ্ধি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। সে ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের শ্যালক মাহাদীর হয়ে প্রক্সি দিতে আসে। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করেছে। সে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় মোবাইল কোর্টের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছেনা তবে পাবলিক পরীক্ষার প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।