সাইফুর নিশাদ : নরসিংদীর মনোহরদীর সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে আজ রোববার দুই শিক্ষিকাসহ ৩০ শিক্ষার্থী শ্রেণীকক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। স্কুলটি তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে ঘটনার কারণ উদঘাটনে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে স্কুলটিতে গত বৃহস্পতিবার একইভাবে শ্রেনীকক্ষে ১৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
স্কুলটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আজ রোববার সকাল থেকে সেখানে আবারও একইভাবে একের পর এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে। তাদের কেউ মাথা ঝিমঝিম করে, কেউ কেউ মাথা ঘুরে, কেউ শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে মাত্র দুইজন ছেলে বাদবাকী সব শিক্ষার্থীই মেয়ে বলে জানা গেছে।
এবার সেই অসুস্থতায় যুক্ত হয়েছেন শান্তা ইসলাম ও জাহানারা ইয়াসমিন নামের স্কুলের দু’শিক্ষিকা। তবে তারাসহ অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখন ভালো আছেন।অভিভাবকগণতাদের বাড়ী নিয়ে গেছেন বলেও জানা যায়।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ জনকে চিকিৎসার্থে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হচ্ছে মায়িশা (১৪), তামান্না (১৪), উর্মি (১৩), জ্যোতি (১৫) ও জোনাকী (১৬)।
ঘটনার খবর পেয়ে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজাউল করিম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুল হাসান মাহমুদ, ৩ চিকিৎসক ও ৫ সেবিকাসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হন। এসময় মনোহরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহীদুর রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
চিকিৎসার্থে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানায়, সকালে বাড়ী থেকে নাস্তা খেয়ে আসতে পারেনি সে। অ্যাসেম্বলী করার সময়েই খারাপ লাগছিলো তার। পরে দ্বিতীয় ক্লাশে মাথা ঘুরে পড়ে গেলে এখানে নিয়ে আসা হয় তাকে।
এ বিষয়ে ডাঃ রাশেদুল হাসান মাহমুদ জানান, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই শারিরীকভাবে দুর্বল। বেশীর ভাগই বাড়ী থেকে নাস্তা না খেয়ে আসাসহ মানসিক কারণ ও ভয় পাওয়ার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে তিনি মনে করেন।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রেজাউল করীম এ প্রসঙ্গে জানান, কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে স্কুলটি ৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদঘাটনে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বাড়ী থেকে সকালের নাস্তা খেয়ে আসা এবং দুপুরের খাবার নিয়ে আসা নিশ্চিত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।