আলমগীর পাঠান, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীতে কম সময়ে আগাম জাতের আমন ধানের ভালো ফলন ও দামে বেজায় খুশি এখানকার চাষিরা। ধান কাটা মাড়াই জারাই সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, যে দিখে চোখ যায় বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠে মাঠে পাকা ধানে সোনালি রঙে অপরুপ সুন্দর রুপে সেজেছে। ইতিমধ্যে উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালীন আগাম জাতের ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৯৩, এবং বিনা- ৭ ও বিনা-১৭ ধান কাটা শুরু হয়েছে। মাঠ থেকে বাড়ির আঙিনা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। শ্রমজীবী মানুষ ভোর থেকে খেতে (কাস্ত)কাঁচি চালাচ্ছেন। ধান কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
কৃষকেরা জানান, মৌসুমের মাঝামাঝি সময় বিভিন্ন এলাকায় ইঁদুর ও পোকার আক্রমণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শংকিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন ও দামে চাষিরা বেজায় খুশি। ধান কাটার পর পর ওই একই জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজ’সহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে লাভের আশায় স্বপ্ন বুন ছেন তারা। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াই। অগ্রহায়ণে পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকেই কাটা ও মাড়াইয়ের ধান বাজারে বিক্রিও শুরু করছেন। বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে।
বেলাবরের কৃষক আলী হোসেন বলেন, এ বছর ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। মণ প্রতি ১৩ শ টাকা দরে ৩০ মন ধান বিক্রি করছি। বোরোধান রোপণের আগে অতিরিক্ত ফসল সরিষা, আলুসহ শীতকালীন সবজি আবাদ করবো।
রায়পুরার আদিয়াবাদ গ্রামের কৃষক মো. মোস্তফা বলেন, হাইব্রিড জাতের বিনা-৭ ও ব্রিধান-৯৩ এবং ব্রি ধান- ৩৪ জাতের চিকন ধান রোপণ করেছি। এ বছর ধাপে ধাপে বৃষ্টি হওয়ায় আল্লাহ ধান ভালোই দিয়েছে।
নারায়ণপুর ইউনিয়ন হোসেননগর গ্রামের কৃষক মো.হিমেল মিয়া বলেন, বিনা-১৭ ধান রোপণ করি। এটা একটু আগে কাটা যায় এবং ধান কাটার পর অন্য একটি ফসল আবাদ করতে পারি।
বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের আরমান হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের ব্রি ধান ৭৫ আবাদ করে ভালো ফলন হয়েছে। এখন আবার জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করার চিন্তা করছি।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলায় ৪১ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদ হয়। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫ হেক্টর কম। এক লাখ ৩২ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আগাম জাতের ৬ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। সেই সাথে উৎপাদিত খড় দিয়ে গো-খাদ্যেরও সংকট অনেকাংশে মেটাতে সক্ষম। জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি গড় ফলন প্রায় ১৬ মণ। ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।