সাব্বির হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানা আলোচিত সেই ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভুইয়ার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) বাদ আছর নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সাধুর বাজার ফুটবল খেলার মাঠে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার নিজ গ্রাম ইছাখালীর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের খামখেয়ালির কারণে গতকাল মরদেহ নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। আজ সকালে মরদেহ ময়নাতদন্ত করিয়ে দুপুর আড়াইটায় বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
নিহতের বড় বোন ফিরোজা জানান, ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরের কাশেম আলীর একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জল্লাদ শাহজাহান। সেখানে গতকাল ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার বুকে ব্যথা উঠে। পরে বাড়ির মালিক রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন শাহজাহান ভূঁইয়া। একটি ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যা মামলা ও আরেকটি অস্ত্র আইনে মামলা। এই দুই মামলায় ১৯৯১ সালের ১৭ মে থেকে কারাগারে ছিলেন শাহজাহান। দুই মামলায় তার সাজা হয়েছিল ৪২ বছর। ফাঁসি কার্যকর ও অন্যান্য কারণে তাঁর সাজার মেয়াদ কমিয়ে ৩২ বছর করা হয়েছিল। ওই সাজা শেষ হওয়ার পর গত বছরের ১৮ জুন শাহজাহান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। ৪২ বছরের সাজার মধ্যে প্রতি ফাঁসির জন্য দুই মাস কারা রেয়াত পেয়েছিলেন শাহজাহান।
পাশাপাশি শাহজাহানের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আবেদনের প্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ তার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ ৩১ বছর ছয় মাস দুইদিন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দিজীবন কাটানোর পর তিনি মুক্ত হন।
জল্লাদ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। তিনি নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। ৭৪ বছর বয়সী শাহজাহান কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়ার পর এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়
কারাগারের তথ্যানুযায়ী, শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে মুক্তির আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ বাংলাদেশের আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন।