নিজস্ব প্রতিবেদক : আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র নরসিংদীর দূর্গম চরাঞ্চল আলোকবালীতে আওয়ামীলীগ সমর্থিত দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন গুলিবিদ্ধ সহ ২০ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০টি বাড়িঘর। লুট করা হয়েছে গোয়ালের ৩টি গরু।
আজ বুধবার ভোর রাত ৫টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চল অলোকবালীতে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত ৩ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে হামলা ও ভাংচুর নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আলোকবালী উইনিয়ন আওয়ামলীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু।
গুলিবিদ্ধ অলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু সমর্থক হলো মো: মনিরুজ্জান, বজলু মিয়া, শীতল মিয়া, আল-মাফুজ,আবদুর রকমান, খোকা মিয়া।
গুলিবিদ্ধ অলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ’র সমর্থকরা হলো বাচ্চু মোল্লার ছেলে রমজান (২৫), আজিজ মোল্লার ছেলে মোজাম্মেল (১৮), মুকবুল মোল্লার ছেলে আরিফুল (১৯)। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আমজাদ (২০) নামে একজন নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নর বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন দীপুর সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এড.আসাদ উল্লাহ’র দন্ধ চলে আসছিল। এ দন্ধের জেরে একাধিকবার হামলা-মামলা, সংঘর্ষ ও একাধিক হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। এ নিয়ে উভয় সমর্থকদের মধ্যে দন্ধ আরো তীব্র হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসাদ উল্লাহ’র বেশ কয়েকজন সমর্থক এলাকা ছাড়া হয়।
আজ বুধবার ভোর রাত ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রামের অর্ধশতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তারা গ্রামে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে গুলি বর্ষণ করেন। ওই সময় বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থকরা বাধা দেয়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন ছড়রা (ছিটা) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
ওই সময় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হামলা চালিয়ে ফেরার পথে হামাকারীরা ফরহাদ নামে এক গ্রামবাসীর ৩ টি গরু লুট করে নেয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে সকালে ও দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে সকালে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে হামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামলীগের সভাপতি এড.আসাদ উল্লাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু।
আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামলীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ বলেন, ভোর রাত ৫টার দিকে চেয়ারম্যান সমর্থকরা অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ি সহ আমার সমর্থখদের উপর হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছেন। ওই সময় তারা আমাদের ২৫ থেকে ২০টি বাড়ি ভাংচুর করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু বলেন, নির্বাচন ও গ্রামের মানুষের উপর হামলা করার মামলাকে কেন্দ্র করে আসাদের বেশকিছু লোক গ্রামছাড়া। তারা আজকে ভোরে ভারাটে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের নিয়ে গ্রামে আসে। এসে তারা নির্বিচারে আমার সমর্থকদের উপর গুলি চালিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের ৬ জন গুলিবিদ্ধ সহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
সদর হাসপাতালে আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: মাহামুদুল বাশার কমল জানিয়েছেন, আলোকবারীর ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৬ জন ছিটা গুলিবিদ্ধ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। এতের মধ্যে ৩ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। আহতরা ভালো আছে। খুব গুরুতর কিছু নয়।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ, বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোন খবর পাইনি। এখন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।