নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর হাজিপুরে বাড়িতে ডেকে নিয়ে রুনা বেগম নামে এক নারীকে কুপিয়ে ও জাবাই করে হত্যা করেছে সাবেক স্বামী। হত্যার পর বাড়িতে লাশ ফেলে পালিয়ে গেছে পাষন্ড স্বামী। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সদর উপজেলার হাজিপুর চকপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে রুনার মৃত্যুর খবরে তার স্বজনরা হাসপাতালে ভীর জমায়। স্বজনদের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। নিহত রুনা বেগম (৪৫) শহরের বেপারীপাড়া এলাকার করিম মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যার নিহত রুনার সাবেক স্বামী রৌশন মিয়া রুনাকে হাজিপুর চকপাড়া এলাকার তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। সেখানে দুই জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে রুনাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে কুপিয়ে ও পরে বটি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। ওই সময় ঘরের মধ্যে হৈচৈই ও চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে গেলে রৌশন মিয়া সবার সামনে দিয়েই পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা রুনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে রুনার মৃত্যুর খবরে তার স্বজনরা হাসপাতালে ভীর জমায়। স্বজনদের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
নিহতের মা শাহারা বেগম বলেন, ভ্যান চালক রৌশন মিয়া মাদকাশক্ত। টাকার জন্য প্রায়ই রুনাকে মারপিট করতো। এরই জেরে গত দুই বছর আগে রৌশনকে ডিভোর্স দেয় রুনা। এর পরও রুনাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নানা রকম চেষ্টা চালায়। কিন্তু রুনা রাজি হয়নি। সে রৌশনকে ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে বেপারীপাড়া এলাকায় এসে বসবাস করতো।
প্রতিবেশি শাজাহান মিয়া বলেন, ঘরের মধ্যে হৈচৈই ও চিৎকারের শব্দ শুনে আমারা এগিয়ে যাই। দরজা ধাক্কা দিলেও তারা দরজা খুলেনি। অনেক্ষন পর দরজা খুলে রৌশন মিয়া দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। রক্ত দেখে আমরা হতবাগ হয়ে পরি। পরে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহামুদুল কবির আরিফ বলেন, হাসপাতালে আনার পর আমরা রুনা বেগমকে মৃত অবস্থায় পাই। তার গলার পেছন দিকে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়াও পেছন দিকে কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সদর মডেল থানার অফির্সার ইনচার্জ (ওসি) তানভির আহমেদ বলেন, পারবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা রাখছি স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাকে আইনের আওতায় আনা যাবে।