এম আজিজুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর রায়পুরায় প্রসিদ্ধ আউলিয়া শাহসুফি হযরত টকি মোল্লা খন্দকার (রঃ) এর ৩ দিন ব্যাপী বাৎসরিক ওরসের শেষ দিনে গতরাতে মাঘের ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে রাতভর হয়ে গেলো বাউল শিল্পীদের নিয়ে আধ্যাত্মিক গানের ‘ভাবতরঙ্গ’ মহোৎসব। রাতভর দেশের খ্যাতিমান শিল্পী গোষ্ঠি লালন শিল্পী ‘চাতক পাখি’ গোষ্ঠীর বিভিন্ন শিল্পীদের কন্ঠে গানে মাতলেন হাজারো ভক্ত শ্রোতা৷
প্রায় ৩০০ বছর যাবত হয়ে আসা এ ওরসটিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ছিলো ব্যাপক আয়োজন। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এটি ২২ জানুয়ারি রাতে সমাপ্ত হয়। প্রথম দুই দিনে কাফেলায় কাফেলায় সামা গান পরিবেশন হয়৷ শেষ দিনে হয় ভাবসঙ্গীত৷ এটি রায়পুরা উপজেলার রাজপ্রসাদ গ্রামে টকি মোল্লার ওরস নামে ব্যাপক পরিচিত ।
ভাবতরঙ্গের উদ্বোধন করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ নরসিংদী-৫ আসনের ৭ বারের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। এসময় উপস্থিত ছিলেন, রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি সহ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা।
আধ্যাত্মিক মরমি সঙ্গীত পরিবেশনায় দর্শক শ্রোতা মাতিয়ে গেলেন টিভি পর্দার জনপ্রিয় দরাজ কন্ঠ শিল্পী রাজিব শাহ্, হামিদা পারভিন, শৈলী সূত্রধর, ‘চাতক পাখি’ বাউল গোষ্ঠী! ‘আল্লাহ রাসুলের নাম’ ‘আল্লাহ বলো মনরে পাখি আল্লাহ বলো’ ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’—বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের আধ্যাত্মিক বাণীর স্লোগানে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এই মহোৎসবে লালনের রেখে যাওয়া মানবমুক্তির অর্ধশতাধিক আধ্যাত্মিক বাণীসংবলিত গান গাওয়া হয়।
ওরস পরিচালার দায়িত্বে থাকা খন্দকার হালিম বলেন, প্রতি বছরই এখানে ওরস পালন করা হয়ে থাকে। এ বছর ওরসে আগত ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য ওরসের পক্ষ থেকে ২০০ স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তায় কাজ করছে। এছাড়াও ২০ টি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রাখা হয় মাজার এলাকা।
জানা গেছে, সুপ্রসিদ্ধ আউলিয়া শাহ্ সুফি হযরত টকি মোল্লা খন্দকার (রঃ) উপজেলার রাজপ্রসাদ গ্রামে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে ব্রত ছিলেন। প্রয়ানের এখানে উনার রওজা। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে মাজার কমিটির উদ্যোগে প্রতিবছর বাংলা মাঘ মাসের ৬,৭,৮ তারিখ তিনদিন ভক্ত আশেকানদের নিয়ে চলে ওরস মোবারক। ওরস উপলক্ষে মাজার এলাকায় জমে উঠে গ্রামীণ মেলা। ওই সময় মহোৎসবকে ঘিরে এখানে হাজার হাজার ভক্তের আনাগোনা লক্ষ করা যায়।