আলমগীর পাঠান, নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম চেষ্টায় ৪৩ তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের মো: তাজুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে তাহমিনা আক্তার শিউলি। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী।
জানা যায়, তাহমিনা আক্তার শিউলি তাঁর বাবা মায়ের ৫ম সন্তান। সে ছাড়াও তাঁর আরো তিন ভাই ও এক বোন রয়েছে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠে তাহমিনা ছোট বেলা থেকেই মেধার লড়াইয়ে নিজের সেরাটা দেওয়া শুরু করেন। ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করে ক্লাস টেন পর্যন্ত তাহমিনা আক্তার প্রত্যেক ক্লাসে ক্লাস টপার হয়ে মেধা তালিকায় স্থান ধরে রাখেন।
পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেনিতে বৃত্তি, এসএসসিতে গোল্ডেন প্লাস ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ সহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি ডিপার্টমেন্টে থেকে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়ে নিজের সফল অবস্থান অর্জন করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর টিউশন এবং কোচিংয়ে ক্লাস নিয়ে নিজের সকল খরচ নির্বাহ করার চেষ্টা করেন। মাস্টার্স পড়াকালীন শেষ পর্যায়ে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করেন। করোনার মহামারীর মাঝে তিনি ৪৩ তম বিসিএসে আবেদন করেন।
কিছুদিন পরই ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন ৪ লাখ ৩৫ হাজেরের বেশি পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে মাত্র ১৫ হাজারের কিছু বেশি প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য টেকানো হলে তাহমিনা আক্তার শিউলি এই ধাপ উৎরিয়ে যান।
পরবর্তী ধাপে তিনি বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় মাত্র ৯ হাজার প্রার্থীকে ভাইভার জন্য টেকানো হলে এখানেও তাহমিনা আক্তার টিকে যান। তিনি ভাইভার জন্য পড়াশোনা করতে থাকেন। গত ২৬ শে ডিসেম্বর ভাইভার রেজাল্টে তাহমিনা আক্তার চূড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পান। উল্লেখ্য, মোট ৫২ জনকে সুপারিশ করা হয় যেখানে তাহমিনা আক্তার শিউলির মেধাক্রম ২৪তম।
তাহমিনা আক্তার শিউলি এই পুরো বিসিএস জার্নিতে তাঁর পরিবার তাকে কতটা সাহায্য করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাবা-মা, ভাইদের সব সময় স্বপ্ন দেখেছেন, সাহস যুগিয়েছেন। তাই জার্নিটা পরিশ্রমের হলেও কঠিন বা অসম্ভব মনে হয়নি। পরিবারের আশা ও স্বপ্নই আমাকে এই পর্যন্ত এনেছে। আশা করি নিজের ওপর অর্পিত সব দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করে দেশের মানুষের সেবা করার সুমহান ব্রত নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো।