এম আজিজুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে দ্বিতীয় বার আবারো আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ দুটির আলমারীতে থাকা গুরুত্বপুর্ণ কিছু ফাইল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং কিছু খাতা চুরিও হয়েছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রায়পুরা থানার পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান মিতুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী মামুন মিয়া সহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটকের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার এসআই আলমগীর হোসেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তারা কাছে গিয়ে ভেতরে অফিস কক্ষে আগুন জ্বলতে দেখে সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায় আগুনে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে থাকা গুরুত্বপুর্ণ কিছু ফাইল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এসময় কিছু খাতা চুরিও হয়েছে।
তারা আরো জানায়, এর আগেও গত মাসে একবার অফিসে চুরি ও ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্কুলের অফিসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পুড়ে যাওয়া কক্ষে কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া গেছে। এনিয়ে স্কুলটির অফিসে দ্বিতীয়বাবের মতো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বার বার এমন ঘটনার কারণ খুজেঁ পাচ্ছে না কেউ।
তবে অনেকেই ধারণা করছেন এর সাথে বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা ও দরজা অক্ষত থেকেও কিভাবে ভেতরে বার বার আগুন লাগছে এটা নিয়ে জনমনে তৈরী হয়েছে নানান প্রশ্নের।
স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরী কাম প্রহরী মামুন মিয়া বলেন, সন্ধ্যায় স্কুলের সব কিছু ভালোভাবে খেয়াল করে তালা লাগিয়ে বাড়িতে যাই। যাওয়ার দশ মিনিট পরেই খবর পাই স্কুলে আগুন লাগছে। পরে খবর পেয়ে এসে দেখি তালা লাগানো কিন্তু ভিতরে আগুনে কিছু কাগজপত্র পুড়ে গেছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা সরকার বলেন, খবর পেয়ে স্কুলে এসে দেখি সবকিছু পুড়ে গেছে। অফিস কক্ষে কেরোসিন এর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ আগুন দিয়েছে। এরআগেও স্কুলের অফিসে একবার আগুন লেগে কাগজপত্র পুড়ে গেছে এই ঘটনা থানায় জানানো হয়েছে। এছাড়াও গত মাসের ২৭ তারিখে অফিসে একবার চুরি হয়েছে। বার বার এমন ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলক মনে হচ্ছে।
চান্দেরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন খন্দকার মিতুল বলেন, একই স্কুলে দুইবার আগুন ও একবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আগুনের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে কেউ তালা খোলে ভেতরে প্রবেশ করে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে এই ঘৃণ্য কাজ যে করছে তার বিচার দাবী করছি।
রায়পুরা থানার এসআই আলমগীর সরকার বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ ঘটনায় স্কুলটির দপ্তরী মামুন মিয়া সহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।