জহিরুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আইনুদ্দীন আল আজাদ এবং কলরবের তরুণ শিল্পী ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল আলমের স্বরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২২ জুলাই) পল্টনস্থ বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
কলরবের প্রধান পরিচালক আলহাজ্ব রশিদ আহমাদ ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, জাগ্রত কবি মুহিব খান, কলরবের পরিচালক শাহ্ ইফতেখার তারিক, কলরবের নির্বাহী পরিচালক মুফতী সাঈদ আহমাদ, কলরবের যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান ও মুফতী রেজাউল করীম আবরার।
কলরবের উপস্থাপক ইলিয়াস হাসানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী আতাউর রহমান বলেন, মরহুম আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ. আমার সহকর্মী ছিলেন। আমরা এক সাথে বিভিন্ন স্বপ্ন দেখেছি। তিনি কেবলই একজন সাংস্কৃতিক বিপ্লবীই ছিলেন না বরং তিনি ইসলাম বিজয়ের স্বপ্ন দেখতেন।
বাংলাদেশে ইসলাম ও ইসলামি আন্দোলন নিয়ে সর্বদাই ভাবতেন। তার কলরব প্রতিষ্ঠাও ছিলো ইসলামকে এগিয়ে নেয়ার জন্য। তাই তিনি কলরবের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে সাথে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিপ্লবে যথাসম্ভব সম্পৃক্ত থাকার আহবান জানান।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আইনুদ্দিন আল আজাদের স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন – আজাদ রহ. কে আমি ঢাকায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলাম। তাঁর বিশেষ কিছু প্রতিভা ছিলো বলেই ঝিনাইদাহ থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলাম আমরা। ঢাকায় এসে তিনি খুব অল্প সময়েই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁর সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাগ্রত কবি মুহিব খান বলেন – মরহুম আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ. ছিলেন একটি বিপ্লবের পদধ্বনী। তিনি কলরব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতির একটি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তিনি আমার জীবনের অংশ ছিলেন বলা যায়। তিনি ছিলেন এ দেশের ইসলামী সংস্কৃতির মহিরূহ্।
স্বরণসভায় তিনি মাহফুজুল আলমের স্বরণে বলেন, মাহফুজ খুব ছোট বয়সেই এবং জীবনের অল্প সময়েই ইসলামী সংস্কৃতিতে অনেক বড় ভূমিকা রেখে গেছেন। বিশেষ করে সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখে গেছেন। তার অভাব পূরণ হবার নয় কখনও। তাকে হারিয়ে আমরা অবশ্যই অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। কলরবের এগিয়ে যাওয়ায় তাঁর ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। আমরা তাঁর জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাত দান করেন।
মাহফুজুল আলম এবং আইনুদ্দীন আল আজাদ স্বরণে শোকাতুর বক্তব্য রাখেন কলরবের নির্বাহী পরিচালক মুফতী সাঈদ আহমাদ এবং মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান। তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, আইনুদ্দিন আল আজাদ রহ ছিলেন আমাদের ছায়া। তিনি আমাদেরকে সন্তানের মত করে যত্নে রাখতেন। উনার রেখে যাওয়া পথে আমরা চলতে চাই। ইসলামি সংগীতের যে ধারা যে বিপ্লব তিনি তৈরি করেছেন সে পথে চলতে চাই আমরা।
তারা মাহফুজুল আলম সম্পর্কে বলেন, মাহফুজুল আলম একটি সংগীত প্রতিযোগীতার মাধ্যমে প্রথম স্থান অধিকার করে কলরবে যুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর ছোট্ট জীবনের পুরোটা সময় সে কলরবের সাথেই মিশে ছিলেন। কলরবের জন্যই সে তাঁর সবটুকু সময় পার করে গেছেন। ইসলামি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবদান আমরা সর্বদা স্বরণ রাখতে চাই। আমাদের বিশ্বাস আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে ভালো রাখবেন।
সভাপতির বক্তব্যে কলরবের প্রধান পরিচালক রশিদ আহমাদ ফেরদৌস বলেন, আইনুদ্দিন আল আজাদের সাথে ঢাকায় আসার পর থেকেই আমার যোগাযোগ এবং সম্পর্ক। কলরব তাঁর দেখানো পথে সাংস্কৃতিক বিপ্লবে এগিয়ে যাবে। তিনি মাহফুজুল আলমের জন্যও বিশেষ দোয়া করেন এবং বলেন, মাহফুজ আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন ছিলো। তার জন্য আমরা দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা তাকে মাগফিরাত দান করুক। তিনি কলরবের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা কলরবের পাশে থাককেন। কলরবের উন্নতিতে ভূমিকা রাখবেন।
স্বরণসভা ও দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কলরবের সিনিয়র শিল্পী আবু রায়হান, জনপ্রিয় উপস্থাপক ও শিল্পী ইয়াসিন হায়দার, ওমর আবদুল্লাহ, হুসাইন আদনান, তাওহিদ জামিল, সালমান সাদী, ইলিয়াস আমিন ও আবির হাসানসহ কলরবের সর্বস্তরের শিল্পী এবং শিক্ষার্থীরা।