নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরও ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে লোডশেডিং। আর তীব্র লোডশেডিংয়ে অনেকেরই কাটছে নির্ঘুম রাত, অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনে ও রাতের বেশীর ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় থমকে যাচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম। ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। নামাজের সময়ও অনেক এলাকায় দেখা দিচ্ছে লোডশেডিং।
পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ দিন ও রাতের বেশীর ভাগ সময় পাওয়া যায় না বিদ্যুৎ। টানা কয়েকদিনের লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর, দোকান, মার্কেট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে ঘোড়াশাল পল্লী বিদ্যুৎ আঞ্চলিক অফিস বলছে, পলাশ তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের গ্রীড থেকে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকাসহ অপর ৪টি ইউনিয়নে একই চিত্র পল্লীবিদ্যুতের। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শপিংমল গুলো বিদ্যুৎ সংকটে অচল হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে ক্রেতারা আসছে না মার্কেট গুলোতে জানালেন ব্যবসায়ীরা।একই কারণে উপজেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা- কর্মচারী, ফটোকপি-কম্পিউটারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে ২-৩ ঘন্টার আগে ফিরে আসছে না। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কবলে উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
ঘোড়াশাল বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মুন্না, সিরাজুল, বাবুল সহ একাধিক গ্রাহক জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য করা মুশকিল হয়ে উঠছে। পলাশ নতুনবাজার এলাকায় বসবাসরত পলাশ উপজেলা মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু জানান, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। অভিযোগ জানানোর জন্য বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের যেসব নাম্বার দেয়া আছে এগুলো খোলা থাকলেও কল দিলে রিসিভ করে না।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন মৃধা জানান, অতি মাএার লোডশেডিং এর কারনে বাড়ীতে পানির সমস্যা তীব্র হয়ে উঠেছে। উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের দুলু মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী জানান, আমাদের এলাকায় দিনে-রাতে ৬/৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না, যার ফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
পলাশের ডাংগা ইউনিয়নের সেলিম মিয়া ও গজারিয়া ইউনিয়নের নাসিম আজাদ নামে পল্লী বিদ্যূৎতের গ্রাহক জানান, আমাদের এলাকায় আগে কখনো বিদ্যুতের এমন লোডশেডিং হয়নি। ইদানিং দিনে রাতে প্রায় ৪/৫ ঘন্টার অধিক সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নরসিংদী-১ ঘোড়াশাল আঞ্চলিক অফিসের ডিজিএম মোঃ আকবর হোসেন অধিক লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকের বিদ্যুৎতের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে। তবে অচিরেই এর সমাধান হয়ে যাবে।