সাব্বির হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের জেলখানায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ আসামীর ফাঁসি রায় বাস্তবায়ন করে আলোচিত জল্লাদ শাজাহান ভূঁইয়া ঘুরে গেলেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার নিজ বাড়িতে। আজ শুক্রবার দুপুর ১টায় উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামে তার আপন বোন ফিরোজা বেগমের বাড়িতে পৌঁছেন তিনি। এসময় ভাই-বোন ও স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কান্নায় এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
এদিকে জল্লাদ শাজাহানের গ্রামে আসার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও গ্রামবাসীরা তাকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমায় বোন ফিরোজা বেগমের বাড়িতে। এসময় দীর্ঘ প্রায় ৩২ বছরের কারাবন্দী জীবনের দুর্বিসহ সময়গুলো যেনো ভুলে গেলেন তিনি। দুপুরে এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে বোনের বাড়িতে খাবার দাবার সাড়েন। পরে নিজ এলাকা ইছাখালী গ্রামের মানুষজনের সাথে কুশলাদি বিনিময় শেষে গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সন্ধায় তিনি আবার ঢাকার বন্ধুর বাসার উদ্দেশ্য রওনা করেন।
জল্লাদ শাজাহানের বোন ফিরোজ বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, দীর্ঘ ৩২ বছর পর ভাইকে কাছে পেয়ে খুব ভালো লাগলো। আমরা আর আমাদের ভাইকে হারাতে চাইনা। আমরা চাই ভাই যেনো আমাদের সাথে বাকিটা জীবন একসাথে পার করে।
জল্লাদ শাজাহান ভূঁইয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ ৩২ বছর পর নিজ গ্রামে এসে আমি বাকরুদ্ধ। এত ভাল লাগলো বাসায় প্রকাশ করতে পারবো না। নিজ গ্রামে আমার স্বজনরা ছাড়া মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই টুকুও নেই। যে জায়গা জমি ছিলো তাও অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। আমার জন্মস্থানে বাকিটা জীবন পার করতে চাই। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার চাওয়া তিনি যেন আমার নিজ গ্রামে মাথার গোঁজার ঠাঁইটুকু করে দেন।
উল্লেখ্য, দেশের বহুল আলোচিত কারাবন্দী এই জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া (৭৩) ৩১ বছর ৬ মাস ৭ দিন কারাভোগ শেষে রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত জীবনে প্রবেশ করেন।
কারাসূত্রে জানা যায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, শারমীন রিমা হত্যার আসামী খুকু মনি, ডেইজি হত্যা মামলার আসামী হাছানসহ আলোচিত প্রায় ২৬ জনের ফা়ঁসি কার্যকর করেছেন।