নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীতে পৃথক পৃথক স্থানে বজ্রপাতে এক নারীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার জেলার রায়পুরা মনোহরদী শিবপুর ও নরসিংদীর সদরের বিভিন্ন স্থানে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বজ্রপাতে নিহতের পর স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে।
নিহতরা হলেন, রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের মোমরাজ মিয়ার স্ত্রী সামসুন নাহার (৪৫), নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া (১২) ও মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাতরদিয়া গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে প্রবাস ফেরত রায়হান মিয়া (২৫)। শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০)।
নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়া মহল্লার শুকমার রায়েল ছেলে শুপ্তকর (১৪)। সে সাঠির পাড়া কালিকুমার উচ্ছ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।
নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুর ২টার দিকে একই উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুরে বাড়ীর সামনের মাঠে ফুটবল খেলছিলেন কয়েকজন কিশোর। এসময় বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে জাবেদ, আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিমুল (১১) হোসেন মিয়ার ছেলে রিয়াজুল (১২) ও শাহআলম এর ছেলে হাসান (১১) আহত হয়। এদের মধ্যে জাবেদ এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
একই সময় মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাতরদিয়া গ্রামে রায়হান মিয়া নামে এক প্রবাস ফেরত যুবক বজ্রপাতে মারা গেছে। দুপুর দুইটার দিকে সে বাড়ির পাশের ঈদগাঁহ মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এছাড়া নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়া মহল্লার পুকুরে গোসল করতে গেলে বজ্রপাতে মারা যায় সাঠির পাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র শুপ্তকর (১৪) ও )।
শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০) মাঠে কাজ করছিল। এসময় বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত শুরু হয়। ওই সময় বজ্রপাতে খোকন মারা যায়।
এর আগে সকালে খড়ের গাদা তৈরী করার জন্য বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে খড় আনতে যান শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের সামসুন নাহার। এ সময় বৃষ্টির সাথে ব্যাপক বজ্রপাত হয়। পরে সেই বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই সামসুন নাহারের মৃত্যু হয়।
শ্রীনগর ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন বলেন, খড় আনতে বাড়ির পাশে জমিতে গিয়েছিলেন শামসুন্নাহার। এ সময় বজ্রপাতে সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।
নিলক্ষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. আক্তারুজ্জামান শামীম বলেন, বাচ্চারা মাঠে ফুটবল খেলছিলো। এসময় বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খেলতে গিয়ে এমন বাচ্চা মারা যাওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ মাহমুদ খাঁন বাহালুল বলেন, তার বাবা ও কয়েক বছর আগে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলো। আজকে সে বজ্রপাতে মারা গেলো। আমরা তার মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে নিয়ে আসার জন্য চেষ্ঠা করছি।