নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রেমিকার টিকটক আইডি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে প্রেমিক শরিফ মিয়ার (২১) মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক প্রেমিক শাকিল (১৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি আজ দুপুরে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন।
গ্রেপ্তারকৃত শাকিল উপজেলার চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে। আর নিহত শরিফ চালাকচর ইউনিয়নের বাঘবের গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় সে। বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনার পর নিহতের চাচা মহিউদ্দিন বাদী হয়ে শাকিলকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। পরে শরিফের মৃত্যুতে সেই মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনার পর থেকেই শাকিলকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেছি। পরে সোমবার ভোরে গোপন সংবাদ এর ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় তার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর বাকী জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শরিফের। শরিফ প্রবাসে চলে যাওয়ার পর চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে শাকিলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় মেয়েটি। পরে এ সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে শরীফ দেশে চলে আসে। পরে প্রেমিকাকে বুঝিয়ে তারা সম্পর্কে জড়ায়।
এদিকে শাকিল তার প্রেমিকার টিকটক আইডির পাসওয়ার্ড জানত। শাকিল প্রেমিকার টিকটক আইডিতে বিভিন্ন ধরনের আপত্তির ভিডিও আপলোড দিত। এ নিয়ে প্রেমিক শাকিল ও প্রবাস প্রেমিক শরিফের মাঝে দ্বন্ধ বাঁধে।
শরিফ মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে শাকিলকে টিকটক আইডিতে আপত্তিকর ভিডিও না ছাড়তে নিষেধ করে ও আইডির পাসওয়ার্ড চায়। শাকিল তা দিতে অস্বীকার করে এবং ছুরি দিয়ে শরিফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
পরে শরিফ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন শরিফকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থায় অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁর মৃত্যু হয়।