নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদী মনোহরদীতে পৌরসভার জনগণের কাছ থেকে আদায়কৃত ভ্যাট ট্যাক্সের ও সচিবের ব্যক্তিগত প্রায় ২১ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তুহিন নামে পৌরসভার এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
বিষয়টি আবার গোপনে সমঝোতারও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে মেয়র আমিনুর রশিদ সুজনের বিরুদ্ধে। তবে বুধবার পর্যন্ত পৌরসভার হিসেবে খোয়া যাওয়া টাকা জমা হয়নি। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পৌরসভার দায়িত্বরত সচিব মো.ইসমাইল হোসেন।
সচিব মো. ইসমাইল হোসেন জানান, গত ১৮ এপ্রিল আমার ব্যক্তিগত ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা আমার একাউন্টে ও অফিসের ভ্যাট ও ট্যাক্সের আদায়কৃত ৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা পৌরসভার একাউন্টে জমা দেয়ার জন্য ২১ লাখ ৯১ হাজার টাকা দিয়ে তুহিনকে পাঠাই।
পরে ২৫ এপ্রিল আমার প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখি একাউন্টে কোন টাকা নাই। পরে তুহিনকে ফোন দিলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে সে অফিসেও আসে না। বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে বাড়ি থেকে পালিয়ে কক্সবাজার চলে গেছে।
তিনি জানান, গত সোমবার তাকে কক্সবাজার থেকে ধরে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজনের মধ্যস্ততায় বিষয়টি সমাধান হয়েছে। মেয়র আমার ব্যক্তিগত টাকা উদ্ধার করেছে। আর পৌরসভার টাকা আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে পৌরসভার হিসেবে জমা দিবে।
এদিকে পৌরসভার ট্যাক্সের টাকার পাশাপাশি পৌর সচিবের ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে কর্মচারী উধাওয়ের ঘটনায় মনোহরদীতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে সচিব মো. ইসমাইল হোসেন ব্যক্তিগত টাকা থাকতে পারে না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত তুহিন গত ২ বছর আগেও ৩ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলো। পরে তা মেয়র সাহেব পারিবারিকভাবে বসে মীমাংসা করে তাকে আবার কাজে ফেরান।
তিনি আরো জানান, তুহিন একজন জুয়াড়ী। সে অনলাইন এ (আইপিএল) জুয়া খেলে থাকে। আমরা একজন অপরাধীকে এই অফিসে আর দেখতে চাই না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজন সাংবাদিদের বলেন, টাকা জমা দিতে যাওয়ার সময় সে তার ভাইয়ের দূর্ঘটনার খবর পায়। পরে সে টাকা জমা না দিয়ে চিকিৎসায় ব্যয় করে ফেলে। পরে সে টাকা জমা দিয়ে দেয়। এটা অফিসিয়াল ভাবে মীমাংসা হয়ে গেছে। সে এখন অফিসও করছে।
জানতে চাইলে নরসিংদীর স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, পৌরসভার আদায়কৃত ভ্যাট ট্যাক্সের টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।