সূর্যের উদয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নরসিংদী’র বুকে বয়ে চলা মহাসড়কগুলোও মানুষের প্রাণচাঞ্চল্যে জেগে উঠে৷ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদভারে ভোরেই জনাকীর্ণ হয়ে উঠে এই অঞ্চল৷ ঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছোতে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌঁড়ায় চাকুরীজীবীরা৷
শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের আনাগোনা যেন পরিণত হয় একেকটা মিছিলে! সেই সাথে এই অঞ্চলে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী কাপড়ের আড়ৎ হওয়ায় কাপড়বোঝাই ট্রাকের আনাগোনাও চোখে পড়ার মতো৷
শিল্পাঞ্চল হওয়ার সুবাদে অন্য যেকোন শহরের তুলনায় কোলাহল এখানে একটু বেশিই৷ কিন্তু মহাসড়কের দানবাকৃতির বেপরোয়া যানবাহন পথচারীদের সবচেয়ে ভয়ের কারণ৷ একটি ওভারব্রীজের অভাবে প্রায়ই সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্ক্ষিত যান ও মানব জটলা৷
দক্ষিণ দিকে রাজধানী ঢাকা থেকে বয়ে চলা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, যা গাউছিয়া-শেখেরচর হয়ে নরসিংদীর পাঁচদোনা মোড়ে এসে মিলিত হয়েছে৷ অপরদিকে উত্তরদিকে ঢাকা থেকে আসা বিকল্প মহাসড়ক যা গাজীপুরের টঙ্গী ও ঘোড়াশাল হয়ে পাঁচদোনা মোড়ে এসে মিলিত হয়েছে৷
আর পূর্ব দিক থেকে ভৈরব ও ভেলানগর হয়ে প্রবেশ করেছে এই পাঁচদোনা মোড়েই৷ তিনদিক থেকে আসা মহাসড়ক ও একটি আঞ্চলিক সড়কের একইস্থানে মিলিত হওয়ায় স্থানটিতে বিশালাকৃর “সড়ক মোহনায়” পরিণত হয়েছে এই পাঁচদোনার মোড়৷ এছাড়াও একই মোড় থেকে পশ্চিম দিকে আঞ্চলিক সড়ক পলাশের ডাংগাতেও প্রবেশ করেছে৷ দেশে মহাসড়কের এত বড় মোহনা খুব অল্প জায়গাতেই দেখা যায়৷
সবমিলিয়ে একটি ওভারব্রীজের অভাবে এই পাঁচদোনা মোড় সাধারণ পথচারীদের কাছে এক গোলক ধাঁধায় পরিণত হয়েছে৷ সৃষ্টি হয়েছে এক মৃত্যুফাঁদের! দৈনন্দিন লাখো মানুষের পায়ে হাঁটার জন্য যেমন পর্যাপ্ত ফুটপাথ নেই, তেমনি নেই কোন ওভারব্রীজও! অথচ এই সড়ক মোহনার পূর্ব থেকে পশ্চিম কিংবা উত্তর থেকে দক্ষিণের পথে যেতে জীবনকে বিপদাপন্ন করে মহাসড়ককে আড়াআড়িভাবে পাড়ি দিতে হয়৷
কোন ধরনের জেব্রাক্রসিং, সিগনাল কিংবা যানবাহনের গতিরোধের ন্যূনতম ব্যবস্থারও দেখা মেলা না এখানে৷ শিশু ও বৃদ্ধ বয়সীদের জন্য এই সড়ক মোহনা যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরী! এত কোলাহলপূর্ণ স্থানটিতে নিয়ন্ত্রণহীন যানচলাচল নানা দুর্ঘটনার মাত্রা যোগায়৷
এই ত্রিমুখী মহাসড়কে অন্তত একটি ওভারব্রীজ এখন আশু জরুরী হয়ে পড়ছে৷ তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি আশু আমলে নিয়ে এখনই এই স্থানটিতে একটি ওভারব্রীজ নির্মাণের অনুরোধ করছি৷
তৌহিদ বিল্লাহ, পলাশ, নরসিংদী।