নিজস্ব প্রতিবেদক : হোক না কোনো প্রাণী, তবুওতো জীবন। তারাও তো নিরাপদ জীবন চায়, বাঁচতে চায়। কিন্তু রাতে ভবনের জানালা দিয়ে খাবারে খোঁজে বের হয় তিনটি বিড়ালের ছানা। পরে প্রায় ১৬ ঘন্টা ধরে আটকে ছিলো তারা। তাদের বাঁচানোর জন্য মা নিচে কান্না করছিলো। আর এই কান্না তখনও পাঁচতলা ভবনের বাসিন্দাদের কানে পৌঁছায়নি। পাশের ভবনের অসুস্থ এক বাসিন্দা সজিবের কানে পৌঁছায় এই কান্না। অবশেষে জীবিত উদ্ধার করা হয় ২টি বিড়াল ছানাকে।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের পাঁচতলা একটি ভবনে এমন একটি ঘটনা ঘটে সোমবার (১৪ মার্চ) রাত ১১টার দিকে। চার তলা ও তিন তলার নিচে কার্নিশে প্রায় ১৬ ঘন্টা ধরে আটকে ছিল ৩টি বিড়াল ছানা। মরতে বসেছিল ওই বিড়াল ছানা ৩টি।
আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পলাশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে বিকেল আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে তারা প্রায় আধা ঘন্টা চেষ্টায় নিরাপদে উদ্ধার করেছে আটকে থাকা দুটি বিড়াল ছানাকে। দুটি উদ্ধার হলেও আরও একটি ভবন থেকে নেমে চলে যায় বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানায় পলাশ ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয়রা জানান, ঘোড়াশাল ছলিমুল্লাহ হাসাপাতালের দক্ষিণ পাশে বকুলের আবাসিক ভবনে ২ দুই তলা, তিন তলা ও চার তলার কার্নিশে সোমবার রাত ১১টা থেকে ৩টি বিড়াল ছানা আটকে ছিল।
পাশের ভবনের বাসিন্দা সজিব জানান, আনুমানিক রাত ১১ টা থেকে তিনটি বিড়াল ছানা কার্নিশে আটকে ছিল। আমি অসুস্থ থাকায় সেই ভবনে যেতে পারিনি। ভেবেছিলাম ভবনের বাসিন্দারা তাদের হয়তো উদ্ধার করবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে তাদের কান্নার আওয়াজ আবারও শুনতে পাই। বিড়াল ছানার মাও ভবনের নিচে তাদের জান্য কান্ন করছে। অবশেষে স্থানীয় সাংবাদিক সাব্বির হোসেনকে বিষয়টি জানাই। পরে তিনি বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানান। পরে জানতে পারলাম দুটি বিড়াল ছানা উদ্ধার করা হয়েছে। এমন একটি কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
সাংবাদিক সাব্বির হোসেন বলেন, বিড়াল ছানাগুলোর কার্নিশে আটকে থাকার ছবি দেখে আমার মনকে নাড়া দেয়। আমি সাথে সাথে পলাশ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাদেকুল বারীকে জানালে তিনি এটা তাদের কাজ না বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা আসলে আমরা উদ্ধার কাজ শুরু করবো। পরে ফায়ার সার্ভিসের হটলাইনে কল দেয়া হলে তারা দ্রুতই ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান। অবশেষে সুস্থ অবস্থায় বিড়াল ছানা গুলো উদ্ধার হওয়ায় ভালো লাগছে।
পলাশ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার হাদিউল ইসলাম শুভ বলেন, আমরা খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় দুইটি বিড়াল ছানা কার্নিশের রডে আটকে রয়েছে। পরে আমরা আধা ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ছাদ থেকে একজন রেসকিউ সদস্যকে কপিকলের রশির মাধ্যমে বিড়াল ছানাগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসি। পরে ভবনের নিচে নিরাপদ স্থানো বিড়াল ছানা দুটি রেখে আসা হয়।