সাইফুর নিশাদ, মনোহরদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর মনোহরদীতে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি ৪৩ বছর ধরে অন্যের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার মাঠ সংকট চলছে। ৪৩ বছর ধরে এ জমি দখলের অভিযোগ স্বয়ং স্কুলটির জমিদাতাদের বিরুদ্ধেই।
মনোহরদীর উপজেলার ১০৭ নম্বর নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে একই গ্রামের আব্দুল হান্নান ও রমজান আলী সরকার নামে দু’ ব্যক্তি ১৯৮০ সালে ৩৫ শতক জমি দান করে দেন। দানপত্র দলিলমূলে জমিটির পূর্ন মালিকানা স্কুলের। তবে তা শুধুমাত্র খাতাপত্রেই।
জমিটির মালিকানা আইনগতভাবে স্কুলের হলেও তাদের দখলে আছে মাত্র ৮ শতক জায়গা এমনটি জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান।বাকী জায়গা জমিদাতা নিজেরাই ভোগ দখল করে আসছেন।
প্রধান শিক্ষক জানান, জায়গার অভাবে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠের সংকট রয়েছে। স্কুল ভবনের বাইরে ২৭শতক জমি স্কুলের। এ জমি কোনদিনই স্কুলের ভোগ দখলে আসেনি। দাতারাই এসব দখলে রেখেছেন।
জানা যায়, এ অভিযোগ স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান ও দাতা সদস্য মৃত রমজান আলী সরকারের ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি জমি দুটি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল হান্নান মাষ্টারের দানকৃত স্কুলের জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। তার এক ভাতিজার মাধ্যমে আব্দুল হান্নান মাষ্টার জমিটি দখলে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত রমজান আলী সরকারের দেয়া ১৭ শতক জমির ভেতর মাত্র ৮ শতক জায়গা স্কুলের দখলে।
বাদ বাকী জমি তার ওয়ারিশগন সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে কবরস্থানের অন্তর্ভুক্ত করে রেখছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে স্কুলটির সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান মাষ্টার জানান, তিনি এখন অবসরে, তার দেয়া জমিটি এখন কার দখলে কে বোরোর আবাদ করেছেন জানেন না তিনি। তবে আগে জমিটি তার দখলেই ছিলো বলে স্বীকার করেন তিনি। জমির আয় দায় কি তখন স্কুল ফান্ডে জমা হয়েছিলো? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি আব্দুল হান্নান মাষ্টার।
স্কুলটির অপর জমিদাতা মৃত রমজান আলী সরকারের পুত্র ইসমাইল হোসেন সরকার জানান, তাদের দখলে স্কুলের কোন জমি নেই। কবরস্থানের অন্তর্ভুক্ত স্কুলের জমিও তাদের দখলে নয়।
এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সোহরাব হোসেন ভূইয়া জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। খোঁজ খবর নিয়ে খারিজের ব্যবস্থা করে আইনী প্রক্রিয়ায় জমিটি স্কুলের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।