1. admin@narsingdirkanthosor.com : admin :
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিবপুরে আ.লীগের শাসনামলে মামলা ও নির্যাতনের শিকার বিএনপির ত্যাগী নেতা অহিদ মেম্বার ‘প্রতিবন্ধীদেরও সমাজে মাথা উচু করে দাড়ানোর অধিকার আছে’ – ইউএনও মাসুদ রানা ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন দল জনতার পার্টি বাংলাদেশ, ঘোষণা আগামীকাল রায়পুরায় ব্র্যাকের ইউনিয়ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত রায়পুরায় রেললাইন ধরে হাটার সময় ট্রেনের কাটায় যুবক নিহত নরসিংদীতে ইউপি মেম্বার ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা রায়পুরায় এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের ছবি তোলায় যুবকের কারাদণ্ড, এক ছাত্রী বহিষ্কার পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে পলাশে ছাত্রদলের মানববন্ধন পলাশে অবৈধ ব্যাটারি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করল পরিবেশ অধিদপ্তর মনোহরদীতে বাবা মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় বাড়িতে আগুন দিলো ছেলে

ঘোড়াশালে আহমদুল কবিরের ১০০তম জম্মবার্ষিকী পালন

সাব্বির হোসেন | নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৬১ বার

সাব্বির হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির সাবেক সভাপতি ও দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আহমদুল কবির মনু মিয়ার শততম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী উপজেলার ঘোড়াশাল মিয়া বাড়ির মসজিদে পবিত্র কুরআন খতম, মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ, মসজিদে মিলাদ এবং দোয়া মাহফিল ও কেককাটা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সাবেক সদস্য দৈনিক সংবাদ এর সম্পাদক আলতামাশ কবির (মিশু), পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঘোড়াশাল পৌরসভার সাবেক প্রশাসক শেখ মোহাম্মদ ইলিয়াস, পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম নাসিম,

আহমদুল কবির স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শাহজাহান, পাঁচদোনা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন, ঘোড়াশাল পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: নুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরহাদ সহ আহমেদুল কবির (মনু মিয়া) স্মৃতি সংসদের বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।

আজ শুক্রবার ১০০তম জন্মশতবার্ষিকী। ১৯২৩ সালের এই দিনে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এ উপলক্ষে পলাশ উপজেলায় মাসব্যাপী বিভিন

তিনি আরও জানান, আহমুদুল কবির মনু মিয়ার শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পলাশ উপজেলার পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে মাসব্যাপী কর্মসূচি চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির।

পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকালে তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’।

দৈনিক সংবাদে বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি এই আদর্শ লালন করে গেছেন। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এদেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।

সংক্ষিপ্ত জীবনী : আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। তার জন্ম ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ ঘোড়াশালে। তিনি ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার এপোলো গ্লেনইগল হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে মারা যান।

শিক্ষা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড : অর্থনীতিতে সম্মানসহ বিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে ডাকসুর প্রথম সহসভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও ১৯৪২-৪৩ সালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ-শিবপুর) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৮৬ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। আহমদুল কবির অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৫১ সালে গ্যাটে সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি নিজের ব্যবসায় যোগদান করেন।

আহমদুল কবির তদানীন্তন পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আশির দশকে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন। রোমে ফাও-এর কনফারেন্সে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। ইইসি দেশগুলোতে তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার ‘সংবাদ’ অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং আহমদুল কবিরকে গ্রেফতার করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ‘সংবাদ’ প্রকাশের জন্য অনেক প্রলোভন দেখায়, কিন্তু আহমদুল কবির পত্রিকা প্রকাশ করেননি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং সংবাদ পুনঃপ্রকাশ করেন।

আহমদুল কবির ১৯৫৪ সালে সংবাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে প্রধান সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আহমদুল কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন। প্রয়াত আহমদুল কবিরের স্ত্রী লায়লা রহমান কবির দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তার বড় ছেলে আলতামাশ কবির ‘সংবাদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সম্পাদক, দ্বিতীয় ছেলে আরদাশির কবির দেশের বিশিষ্ট চা ব্যবসায়ী এবং একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার নিহাদ কবির সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।

আরো খবর..
© নরসিংদীর কন্ঠস্বর
Developed By Bongshai IT