আলমগীর পাঠান, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর বেলাবতে নিখোঁজ হবার ৭ দিন পর অর্ধপঁচা অবস্থায় ৪ বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের মেরাতলীকান্দা গ্রামের একটি ঝোঁপ থেকে শিশুটির লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
উদ্ধার হওয়া শিশুটি উপজেলার মেরাতলীকান্দা গ্রামের তার নানা মাসুদ মিয়ার বাড়িতে থাকতো। তার বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার টেঙ্গাপাঁড়া গ্রামে। সে জন্মের পর থেকেই তার নানার বাড়ি বেলাবতে থাকতো। শিশুটির মা সুমি আক্তার ও বাবা সোহেল মিয়া টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
স্বজনরা জানায়, শিশুটি গত ১৯ ডিসেম্বর মেরাতলীকান্দা গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয়। তারপর অনেক স্থানেই খোঁজাখুজি করেও না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। কিন্তু কোথাও না পেয়ে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রতিবেশিদের বাড়ির পাশে আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে একটি নিপিট্রা ঘাস বাগানের সন্নিকটে চোখ উপরানো অবস্থায় মিশুটির লাশ দেখতে পায়। এসময় লাশের একটু দূরেই পড়ে ছিল শিশুটির পরনের হাফপ্যান্ট। শিশুটির পরিবারের দাবি কেউ শিশুটিকে শারিরীক নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বেলাব থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত বেলাব থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, শিশুটির বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার টেঙ্গাপাঁড়া গ্রামে। তার বাবা সোহেল মিয়া স্ত্রী সুমি ও শিশু সন্তান সোহানাকে নিয়ে তার শশুর বাড়ি মেরাতলীকান্দা গ্রামে থাকেন। সেখান থেকেই স্বামী স্ত্রী দুজনে সোহানাকে নানা নানীর কাছে রেখে টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় চাকরী করেন।
গত সোমবার দিন দুপুরে শিশুটিকে তার নানার বাড়ির একটু সামনে মেরাতলীকান্দা সড়কের পাশে একটি কালভার্টের পাশে বসে কান্না করতে দেখেছে প্রতিবেশিরা। এর কিছুক্ষণ পরই শুনে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছেনা। নিখোঁজ হবার ৭ দিন পর আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়।
শিশুটির নানা মাসুদ মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, গত সোমবার দিন দুপুরে আমার নাতি নিখোঁজ হয়। থানায় গিয়েছি জিডি করতে। কিন্তু পুলিশ বলে আড়িয়াল খাঁ নদে খোঁজ করতে। তাই পরে আর জিডি করা হয়নি। আমার ধারনা আমার শিশু নাতনীকে কেউ ধর্ষণ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নিহত শিশুটির বাবা সোহেল মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে টঙ্গীতে বাসা ভাড়া নিয়ে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমার শিশু সন্তান সোহানা তার নানা নানীর কাছেই থাকে। আমার নিষ্পাপ শিশুটিকে নির্যাতন করে যারাই হত্যা করেছে আমি তার ফাঁসি চাই।
বেলাব থানার ওসি মোঃ তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। এলাকাবাসীর অনেকেই বলেছে যেদিন শিশুটি নিখোঁজ হয় সেদিন তার পরনে কাপড় ছিলনা। তাই ধর্ষন করে হত্যার ঘটনাটি ঠিকনা। আমরা তদন্ত করছি। রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।