নরসিংদীর রায়পুরায় পরীক্ষায় ফেল করায় সাদিয়া আক্তার (১৫) নামে এক শিক্ষার্থী উড়না পেচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১টায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সাধুনগর এলাকার জাহিরের বাড়ির নিজ ঘরে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সাদিয়া আক্তার উপজেলার সাধুনগর গ্রামের জাহিরের বাড়ির কৃষক সোহরাফ মিয়ার মেয়ে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে আলহাজ্ব বজলুল হক জে এম উচ্চ বিদ্যালয় (জয়নগর) থেকে মানবিক বিভাগে অংশ নেয়। এতে ইংরেজি দ্বিতীয় ও গণিত বিষয়ে কম নাম্বার পেয়ে অকৃতকার্য হন।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, নিহত ওই শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর থেকেই কান্না কাটি করতে দেখে প্রতিবেশী ও স্বজনরা শান্তনা দেন। পরে ওই শিক্ষার্থী বড় বোনের সাথে মুঠোফোনে মন খারাপের বিষয়টি জানান।
এই খবরটি শোনে বোনকে শান্তনা দিতে বাড়ি এসে মঙ্গলবার দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে তাকে ডাকাডাকি করে। দরজা বন্ধ থাকায় ওই কিশোরীর সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে। পরে ওই কিশোরী ঘরে ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকতে দেখে। এই অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা রায়পুরা থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মো নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
নিহতের চাচাত ভাই জুয়েল মিয়া জানান, গতকাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় সাদিয়া আক্তার এ নিয়ে মন খারাপ করে কান্নাকাটি করে। কৃষক বাবা কাজে বাড়ির বাহিরে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় একা ঘরে ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে সাদিয়া।
নিহতের বান্ধবী লিজা জানান, পরীক্ষায় ফেল করার পর থেকে রাত পর্যন্ত বিষণ কান্না কাটি শুরু করে। আমিসহ বাড়ির সকলে বোর্ডে পুনরায় যাচাইয়ের জন্য আবেদনসহ মনকে শক্ত রাখার জন্য শান্তনা দেই। আজ মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইনে পুন:যাচাইয়ের আবেদনের কথা ছিলো। দুপুরে শোনলাম সে আত্মহত্যা করেছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মো আল আমিন হোসাইন জানান, ওই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা খুবই দুঃখ জনক ঘটনা। পরীক্ষায় ফেল করা যেন শেষ কথা নয়। শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ ভুল সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকুন।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মো নাসির উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করি। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নরসিংদীর কন্ঠস্বর / এম এম ইসলাম / এইচ রশীদ