নরসিংদীর রায়পুরায় ভুঁইফোঁড় এনজিওর ফাঁদে পড়েছে শতাধিক গ্রাহক। স্বল্প সুদে জামানতহীন ঋণের লোভের ফাঁদ পেতে তাদের কাছ থেকে সঞ্চয় হিসেবে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে ভুঁইফোড় এনজিওর প্রতারক চক্র। প্রতারকদের সেই ফাঁদে পা দিয়ে সাধারণ মানুষ খুইয়ে বসেছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।
খবর পেয়ে আজ বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতারণায় শিকার শখিনা, পপি বেগম, রুবিনার মত আরও অনেকে হতাশায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পরেন।
গত সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে পূর্বহরিপুর মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে স্বচ্ছলতা ফিরবে পরিবারে। ঘুচবে অভাব নামক যন্ত্রণা। ‘সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ নামের এক ভুইফোঁড় এনজিও এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষকে এমন স্বপ্ন দেখিয়েছিল। স্বল্প সুদে ঋণ নেয়ার আশায় এই মানুষগুলো নিজেদের গচ্ছিত টাকা জমা করে এই প্রতিষ্ঠানে।
মঙ্গলবার তাদেরকে ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার একদিন আগেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সোমবার লাপাত্তা হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই এনজিওর প্রধান কার্যালয় ফাঁকা পড়ে আছে। এনজিওর শতাধিক গ্রাহককে কার্যালয়ের সামনে দেখা গেলেও দেখা মেলেনি এনজিও’র কাউকে।
প্রতারক চক্রটি সপ্তাহ খানেক আগে পূর্বহরিপুর গ্রামে প্রবাসী আওয়াল ইসলামের ঘরে প্রতিষ্ঠানের নাম করে অফিস সাজিয়ে বসে। উপজেলার পূর্বহরিপুর, মুছাপুর, সাপমারা, বেগমাবাদ, জয়নগর, মাঝেরচর, আলগীসহ আশপাশের আরও ৪-৫টি গ্রামের নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে মাঠে নামে।
দুই বছরের এককালীন এক থেকে চার লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ওই ঋণ পেতে কিছু শর্ত জুড়ে দেয় এই প্রতারক চক্রটি। তারা জানায়, ঋণ পেতে হলে লাখ প্রতি দশ হাজার টাকা সঞ্চয় দিতে হবে। আর কিস্তি হিসেবে বছর শেষে গ্রাহককে সুদ দিতে হবে ৮-১২ শতাংশ হারে। এভাবে যে যত টাকা ঋণ নেবে সে অনুপাতে সঞ্চয় জমা দিতে হবে। আর এই ঋণ নিতে কোনো জামানত লাগবে না।
যা ‘সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ নামে প্রধান কার্যালয় সর্জনকান্দা বড় পুল রাজবাড়ী, রেজি নং ১২৭৮৮ (৭৯৬) ২০১৪ ইং। প্রতারকরা সঞ্চয় ও ঋণের পাশ বইয়ে সাধারণ মানুষকে ঋণ দেয়ার নাম করে শতাধিক মানুষের কাছথেকে ৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা সঞ্চয়ের টাকা জমা করে। তাতে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোঃ সালাহউদ্দিন, মোবাইল নম্বর দেয়া ছিল ০১৮৫০৩৭৩৬৫৩। সোমবার বিকেল থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে। প্রতারক চক্রটির ৭ সদস্যের নাম্বারও বন্ধ পায়।
ভুক্তভুগী শখিনা, পপি বেগম, রুবিনা, বিলকিস বেগম, তাসলিমা, বিলকিস, জারু মিয়া, আল আমিনসহ আরও অনেকে জানান, প্রবাসী ব্যবসায়ী ঋণ দেয়ার নাম করে সঞ্চয় জমা করে। মঙ্গলবার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে অফিসে এসে দেখি প্রতারক চক্রটি লাপাত্তা। কষ্টের টাকা গুলো পেতে প্রশাসনের সু দৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আজগর হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি অবগত নই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
নরসিংদীর কন্ঠস্বর / রিপোর্ট : হারুনুর রশীদ /