সাব্বির হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতের আগমনে নরসিংদীর পলাশে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। শীত নিবারণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ-তোষক বানাতে ক্রেতারা ভিড় করছেন দোকানগুলোতে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কারিগররা জানান, করোনার কারণে গত বছর গুলোতে লেপ-তোষকের চাহিদা কম ছিল। বন্ধ ছিল দোকানপাট। ক্ষতির মুখে ছিলাম আমরা। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এখন আমরা সেই ক্ষতি কিছু কাটিয়ে উঠতে পারবো। ক্রেতাদের লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার আমরা ভালই পাচ্ছি।
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তবে দেশে কার্তিক মাসের শেষের দিক থেকেই শীতের আগমন শুরু হয়। তাই শীত মোকাবিলায় ব্যবসায়ীরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরি করে দোকানে মজুদ করে রাখছেন।
পলাশ উপজেলা ও ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দোকান গুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে শীতের আগমনে লেপ-তোষক বানাতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কারিগররাও এসব তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ঘোড়াশাল বাজার এলাকার একটি দোকানে লেপ তৈরির অর্ডার দিতে এসে সবিকুল ইসলাম নামে ক্রেতা বলেন, সারাদিনে হালকা কাপড় পড়লেও সন্ধ্যার পর গরম কাপড় পড়তে হয়। আর রাতে কাঁথা বা চাদর গায়ে জড়িয়ে ঘুৃমাতে হয়। কয়েক দিন আগেও রাতে ফ্যান চালিয়ে ঘুমাতে হয়েছে। এখন যে শীত শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে অচিরেই প্রচুর ঠান্ডা পড়বে। তাই শীতের অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তৈরির অর্ডার দিতে এসেছি।
ঘোড়াশালে মেসার্স বিসমিল্লাহ বেডিং হাউসের মালিক রুবেল হোসেন ও কারিগররা জানান, গত বছরের তুলনায় কাপর ও তুলার দাম একটু বেশি। তারপরও করোনার সময়কার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে লেপ-তোষক গত বছরের দাম অনুযায়ী বিক্রি করে যাচ্ছি। শীতের এই সময়ে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছি। কিন্তু রাত ৮টার মধ্যেই দোকান বন্ধ রাখার কারণে আমাদের কাজ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে।
কারিগররা জানান, বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ-তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ১০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল (উল) ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা, সাদা তুলা ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকা করে দাম চলছে। আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে একটি ভালো মানের লেপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১৪০০ টাকা থেকে আড়াই ১৫০০ টাকা। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি লেপ-তোষকের অগ্রিম অর্ডার পেয়েছি। তাই সার্বক্ষণিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। টাকার অভাবে ঠিক মতো ব্যবসা করতে পারছি না।