নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর বিভিন্ন উপজেলায় লটকন চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে কৃষকরা ভালো ফলন ও লাভের আশায় ঝুঁকছেন লটকন চাষে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় গাছে গাছে এখন লটকনের সমারোহ। লটকন বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় পাকা লটকন। ইতিমধ্যে চাষিরা লটকন বিক্রি শুরু করেছেন। এতে বাগান চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। লটকন চাষ করা কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ উপজেলায় চাষিদের মধ্যে লটকন চাষে উৎসাহ বাড়ছে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা।
লটকন চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক কৃষক। তবে এবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গত বছরের তুলনায় ফলন কম হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। এখানকার শত শত মন লটকন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ হচ্ছে। রফতানি হচ্ছে বিদেশেও।
জানা যায়, এ বছর শিবপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৩টি ইউনিয়নে লটকন চাষ করা হয়েছে। জয়নগর, বাঘাব ও যোশর ইউনিয়নসহ আরও কয়েকটি গ্রামে প্রায় ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩ হাজার লটকন বাগান রয়েছে।
এখানকার কৃষকরা জানান, দশ থেকে পনের বছর আগেও লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না। দামও ছিল কম। সেজন্য কেউ লটকনের আলাদা বাগান করার চিন্তা করত না। বর্তমানে টক-মিষ্টি সুস্বাদু এ ফলের চাহিদা ও মূল্য দুটিই বেড়েছে। এমনকি অন্যান্য ফল চাষের তুলনায় লটকনের ফলন বেশি হয় বলে চাষিরাও লাভবান হচ্ছে।
গুনগত মান ভেদে লটকন মণপ্রতি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। পাইকার রা নিজেরাই বাগান থেকে এসে লটকন ক্রয় করে থাকেন। এ উপজেলা পাহাড়ি এলাকায় উঁচু লালচে অম্লীয় মাটি এবং ছায়ামুক্ত আবহাওয়া থাকায় লটকনের ফলন ভাল হয়ে থাকে। ফলে লটকন চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই চাষির সংখ্যা বাড়ছে।
যোশর ইউনিয়নের চৈতন্যা গ্রামের লটকন চাষি ইমাম উদ্দিন সরকার বলেন, আমার ৩০০ শতাংশ জমিতে লটকন বাগান রয়েছে। গত বছর ভালো ফলন হয়েছিল যার ফলে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলাম। এবার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। এখনো লটকন বিক্রি শুরু করিনি। যেহেতু ফলন কম, আশা করি দাম বেশি পাবো।
শিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক বলেন, এখানকার লটকন দেশের বাহিরেও রফতানি হয়ে থাকে। গত বছর দুই থেকে তিন টন লটকন দেশের বাহিরে রফতানি হয়েছে। এবার আরও বেশি চাহিদা রয়েছে।