সুজন বর্মণ, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২০২১ সালের মে থেকে। সময় পেয়েছেন এক বছর চার মাস। আর এ অল্প সময়েই কর্মগুনে আলো ছড়িয়ে তিনি জয় করেছেন জেলাবাসীর মন। তাইতো বিদায় বেলায় ভাসলেন প্রশংসা, আবেগ ও ভালোবাসায়, সিক্ত হলেন ফুলেল শুভেচ্ছায়।
তিনি হলেন বিদায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান। পুলিশের ২৮ তম ব্যাচের এ কর্মকর্তা আজ সোমবার খুলনা রেঞ্জ অফিসে বদলি হন।
রোববার রাতে জেলা পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম সহ বিশিষ্ট নাগরিকরা প্রশংসায় ভাসালেন বিদায়ী এ পুলিশ কর্মকর্তাকে। অভিন্ন কণ্ঠে স্মরণ করলেন জেলায় তার অবদানের কথা। নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হিসেবে দায়িত্বপালনকালে জেলাবাসীর জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি কাজ করেছেন একাগ্রচিত্তে।
পুলিশি সেবা সাধারণ মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে নিয়েছেন নানামুখী উদ্যোগ। তার সময়ে জেলার আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তার নেতৃত্বে চরাঞ্জলের টেঁটা যুদ্ধের হোতাদের গ্রেপ্তার, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা মোকাবেলা, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার, আলোচিত হত্যা মামলার রহস্য উৎগাঠনসহ জনগণের জানমাল রক্ষাতে ব্যাপক কাজ করেছেন। যার সুফল পাচ্ছেন সকলেই।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাহেব আলী পাঠানকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম। তিনি সাহেব আলী পাঠানের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, তিনি একজন দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তা ছিলেন। যেকোন ঘটনার তিনি খুব দক্ষতার সাথে সমাধান করতেন। তার দূরদর্শীতার কারণে আমরা অনেক ক্লু-লেস অপরাধ ও দ্রুততার সাথে সমাধান করতে পেরেছি। যার কারণে নরসিংদীর আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়নি।
এরআগে শনিবার বিকেলে নরসিংদীর পরিশীলন সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে সাহেব আলী পাঠানকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে তাকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে সাহেব আলী পাঠানকে সাংবাদিক বান্ধব পুলিশ সুপার অভিহিত করে নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজ বলেন, আমরা দিন-রাত যে সময়েই তাকে ফোন দিয়েছি আমরা তারঁ সাড়া পেয়েছি। তিনি আমাদের সব সময় তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করেছেন। যার কারণে আমরা অতি সহজে সংবাদ করতে পেরেছি। যা আমরা খুবই কম অন্যান্য পুলিশদের কাছ থেকে পেয়েছি। নরসিংদীর সাংবাদিক সমাজ সাহেব আলী পাঠানকে মিস করবে।
আলোকিত নরসিংদীর সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, আমি পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করি। পাঠান ভাই সবসময় পথশিশুদের মাঝে উপস্থিত থেকে তাদের উৎসাহ দিতো। শিশুদের জন্য খাবার কিনে নিয়ে তাদের সাথে বসে খেতেন। এমন জনবান্ধব পুলিশ আমরা খুব কমই পেয়েছি।
পরিশীলন সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কালাম মাহমুদ বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজের উচ্চ বিত্তরা সবাই তারঁ কাছে সমান গুরুত্ব পেয়েছে। যেকোন সমস্যা নিয়ে গেলে খুবই গুরত্বের সাথে সমাধান করে দিতেন। পুলিশ প্রশাসনে এমন দক্ষ ও ভালো মানুষ আমরা খুবই কম পেয়েছি। আমরা তার কর্মজীবনের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।
বিদায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, আমার যাবতীয় যত প্রশংসা সবকিছুই সহযোদ্ধা-সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য। সকলেই আমাকে এমনভাবে সহায়তা করেছে, তারা এমনভাবে দায়িত্বগুলো পালন করেছে যার ফলশ্রুতিতেই আমি আজ সম্মানিত বোধ করছি। ভবিষ্যতেও যেনো মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে পারি তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।