মোমেন খান, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর শিবপুরে গলায় ফাঁস দেয়া এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বজনদের অভিযোগ যৌতুকের জন্য হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে স্বামীর বাড়ির লোকজন।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল সামান্দা গ্রামে শিপন মিয়ার বাড়ি থেকে এই লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই নারীর নাম নাদিরা বেগম (২০) সে জয়মঙ্গল সামান্দা গ্রামের শিপন মিয়ার স্ত্রী। সে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। ঘটনার পর থেকে শিপন মিয়া ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতের কোনো এক সময় ঘরের আরার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় নাদিরা বেগম। রাতেই তার স্বামী শিপন মিয়া শাশুড়ীকে ফোন দিয়ে নাদিরার অসুস্থতার কথা বলে আসতে বলেন। সকালে নাদিরার মা ফাতেমা বেগম শিপন মিয়ার বাড়িতে এসে খাটের উপর তার মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় গিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে দুপুর দুইটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নাদিরার মা ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত দুই বছর আগে প্রেম করে শিপন মিয়ার সঙ্গে নাদিরার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নাদিরা আমার সাথেই থাকতো। গত সাত মাস যাবৎ স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছিলো। তাদের সাত মাসের একটি শিশু সন্তানও আছে। গত দুইমাস আগে থেকে তার স্বামী যৌতুকের জন্য মারধর করতো।
একসপ্তাহ আগেও বিশ হাজার টাকার জন্য আমার মেয়েকে মারধর করেছে। গতকাল রাতে আমার মেয়ে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে আমাকে ফোন দিতে বলে। আমি কাজে থাকায় রাত দশটার দিকে ফোন দিলে আর ফোন ধরেনি। সকালে এসে মৃত অবস্থায় ঘরের খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেই। আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে এখন সবাই পালিয়ে গেছে।
শিবপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেন, নাদিরার মা থানায় এসে খবর দিলে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের গলায় ওড়না পেচানো ছিলো এবং গলায় দাগ ছিলো। এবিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।