মোমেন খান, নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর শিবপুর মডেল থানাধীন যোশর ইউনিয়নের যশোর (নন্দারটেক) এলাকার জনৈক মোঃ সানোয়ার, পিতা-আঃ রহমান এর ২য় মেয়ে নুসরাত জাহান সায়মা (৮) গত ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২খ্রিঃ তারিখ দুপুর অনুমান ০১.১৫ ঘটিকা হতে নিখোঁজ হয়। ভিকটিম এর পিতা তার মেয়েকে খোজাখুজি করে এবং এলাকায় মাইকিং করে।
যেহেতু পাশ্ববর্তী বাড়ীর ভাড়াটিয়া সেলিনা বেগমের মেয়ে রাইছা (৫) এর সাথে নুসরাত জাহান সায়মা খেলাধুলা করত এবং একে অপরের বাড়ীতে আসা যাওয়া করত সে কারনে বারবার মেয়ের খোজে এলাকার অন্যান্য লোকজন সেলিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার মেয়ের খবর জানতে চায়। কিন্তু সে কিছু জানেনা মর্মে জানান।
পরবর্তীতে সন্ধ্যা অনুমান ৬ ঘটিকার পূর্বে সেলিনা বেগমের মেয়েকে এলাকার লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করলে নুসরাত জাহান সায়মা তাদের ঘরে আছে মর্মে জানান। এতে করে ভিকটিমের পিতাসহ এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে যশোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যশোর ইউনিয়নের বিট অফিসার এসআই/মিনহাজকে সংবাদ প্রদান করেন। এসআই মিনহাজ ও সঙ্গীয় ফোর্স বিট এলাকায় ঘটনাস্থলের পার্শ্বে থাকায় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং সেলিনা বেগম ও তার স্বামী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাদের আটক করে।
সেলিনা বেগমের স্বামী হানিফা বিভাটেক চালক। সে বাড়ীতে এসে স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে পারে তার স্ত্রী নুসরাত জাহান সায়মাকে হত্যা করে লাশ লোহার মেটসেফের ভিতরে রেখেছে। কিন্ত তার পরে সে লোকজনের কাছে অস্বীকার করে লাশসহ ঘরে অপেক্ষা করতে থাকে এবং লাশ গোপনসহ ঘটনাকে অন্য খাতে প্রভাবিত করার নিমিত্তে অপেক্ষমান থাকে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বামী-স্ত্রী মিলে রাতের অন্ধকারে ভিকটিমের লাশ যে কোন জায়গায় ফেলে দিবে।
পরবর্তীতে থানা পুলিশ সেলিনা বেগমের ভাড়াটিয়া ঘর তল্লাশী করে এক পর্যায়ে উক্ত ঘর হতে লোহার মেটসেফের মধ্যে বস্তাবন্দি অবস্থায় ভিকটিম নুসরাত জাহান সায়মা (৮) এর লাশ উদ্ধার করে। সেলিনা বেগমকে একান্তভাবে জিজ্ঞাসা করায় সে নিজেই ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে জানান।
হত্যার কারন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেলিনা বেগম জানায় মেয়েটি দুই কানে এক আনা তিন রতি ওজনের দুইটি স্বর্ণের দুল ছিল যাহা নেয়ার তার মূল উদ্দেশ্যে ছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় সে দুল দুটি নেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু ভিকটিম তাকে দিতে অস্বীকার করে এবং তার মাকে বলে দিবে বলে জানায়। তখন আসামী নুসরাত জাহান সায়মাকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ প্রথমে ঘাটের নিচে রাখে পরবর্তীতে লোহার মেটসেফের মধ্যে বস্তাবন্দি অবস্থায় রাখে। সেলিনা বেগমের স্বীকারোক্তিমতে তার ঘর হতে ভিকটিম এর কানের দুল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, ১। সেলিনা বেগম (২৮), স্বামী-হানিফা, ২। হানিফা (৪৫), পিতা-মৃত জমশের আলী, সাং-পাহাড়ফুলদী, থানা-শিবপুর, জেলা-নরসিংদী বর্তমান ঠিকানা- শিবপুর থানাধীন যশোর এলাকার রেহেনা বেগম এর বাসায় ভাড়াটিয়া।
উদ্ধারকৃত আলামত- ২টি স্বর্ণের কানের দুল (ওজন অনুমান- ১ আনা ৩ রতি)। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী সেলিনা বেগম বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এ সংক্রান্তে শিবপুর মডেল থানার মামলা নং-১১, তারিখ-১৪/০৯/২০২২খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ রুজু করা হয়।