নরসিংদী প্রতিবেদক : নরসিংদীর রায়পুরা থানার মূল ফটকের সামনে ফিল্মি কায়দায় মাফিয়া গ্যাং স্টাইলের কিছু যুবকের বেপরোয়া আচরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রাতে একটি মাইক্রোবাসের সামনে ও ছাদে উঠে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে ছবি তুলছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাইক্রোবাসের দরজা খুলে, কেউবা ছাঁদে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ গুন্ডা-বখাটে ধাঁচের ভঙ্গিতে পোজ দিচ্ছে।
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন যে, “রায়পুরা থানা কি কিশোর গ্যাংয়ের দখলে?” আবার কেউ কেউ এটিকে চরম বেপরোয়া মনোভাবের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন।
জানা যায়, রমজানের প্রথম দিন রবিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আরমান মিয়া আইনি পরামর্শ নিতে থানায় যান। তার সঙ্গে ওই যুবকরাও থানার সীমানার ভেতরে আসে। এরপর যখন আরমান মিয়া থানার ভেতরে প্রবেশ করেন, তখন সুযোগ পেয়ে তারা বাহিরে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলে। ছবিতে ৭ জন যুবককে লক্ষ্য করা যায়। তাদের বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২০ বছর হবে। তারা মাফিয়া ভঙ্গিমায় বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তোলে তা টিকটিকে আপলোড করে। পরে এটি নেটিজেনদের নজরে আসলে তারা ফেসবুক ছবিগুলো প্রকাশ করে নিন্দা জানায়।
মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: আরমান মিয়া বলেন, প্রথম রমজানের দিন ইফতারের পরে আমি রায়পুরা থানাতে যাই একটি বিষয় নিয়ে। আমি থানাতে যাওয়া পর তারা এই মাইক্রোবাস নিয়ে থানাতে আসে ফুটবল খেলার অতিথি করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য । আমি তখন তাদের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলি কিন্তু কোন সময় তারা এই অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ছবি তুলেছে তা আমি দেখেনি। তারা এইসব ছবি তুলেছে টিকটকে দেওয়ার জন্য ।
তিনি আরও বলেন, ছেলেগুলো খুব ভালো কেউ কেউ ব্যবসা করে আর কেউ কেউ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত। উপজেলার অলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূইয়া মাসুদ এর সাথে আমার ব্যবসায়িক কিছু লেনদেন আছে এবং আমি তাদের কিছু অনিয়মের কাজে বাধা প্রদান করায়, তাদের কিছু আওয়ামী মাইন্ডের লোকেরা কারসাজি করে ফাঁসানোর জন্য এই কাজগুলো করেছে। তবে ছেলেগুলো খুবই ভালো তারা কোন অবৈধ কাজের সাথে জড়িত নয়।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, বিষয়টি আমরাও আজকে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। ওই দিন মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান মিয়া থানায় একটি আইনি কাজে এসেছিলেন। উনার কাছেই ছেলেগুলো এসেছে, পরে তাকে ডেকে এনে কথা বলার পর উনার মাধ্যমেই দুই একজনের পরিচয় সনাক্ত করতে পেরেছি। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এগুলো টিকটকের জন্য করা হয়েছে বলে জানায়। এটা আমরা নিজেরাও তদন্ত করছি, কিভাবে তুলল, এই সুযোগটাই কিভাবে পেলো৷ আমাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখছি, প্রযুক্তির সকল টেকনোলজি ব্যবহার করে আমরা হার্ডলাইনে কাজ করছি। পরবর্তীতে যেন এই ধরনের কোন ঘটনা না ঘটে।
এদিকে, সাধারণ মানুষের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।